নিজস্ব প্রতিবেদক,আতাউর রহমান চঞ্চলঃ- ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা জয়লাভ করার পর থেকেই সেরনিয়াবাত পরিবারের মাধ্যমেই শুরু হয় দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন উন্নতি,বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের ভাগ্য ও রাজনৈতিক ভাবে আত্মসামাজিক উন্নয়ন উন্নতিতে অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা ও বাস্তব রূপায়ণে রুপকার সেরনিয়াবাত পরিবার। স্বাধীনতার পর থেকেই এই পরিবারের মাধ্যমেই শুরু হয় দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন।যা বর্তমান সময়ে ধরে রেখেছেন, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এর উত্তরাধীকারী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্, ভবিষ্যতেও বরিশালসহ গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া ধরে রাখবে তার বংশধররা।
এর শুরুটা ছিলো সেরনিয়াবাত পরিবারের অন্যতম উত্তরসুরি, তৎকালীন গৌরনদী যা বর্তমান আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামে ১৯২১ সালে জন্ম নেয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি, সাবেক মন্ত্রী, কৃষক কুলের নয়নমনি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এর মাধ্যমে। তৎকালিন আমলে ভূমি প্রশাসন, ভূমি সংস্কার ও ভূমি রাজস্ব, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ, বিদ্যুৎ ও কৃষি মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৭০ এর নির্বাচন থেকে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। মন্ত্রী থাকাবস্থায় দেশের অন্যান্য উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষক কুলে ব্যাপক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখে সাফল্য অর্জন করায় কৃষক কুলের নয়ন মনি উপাধী লাভ করেছিলেন।
১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেন আব্দুর রব সেরনিয়াবাত।
আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এর মৃত্যুর পরে বরিশালের রাজনীতিতে আবির্ভূত হন তারই জ্যেষ্ঠপুত্র আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ। ১৯৯১ সালে, প্রথম বরিশাল-১ আসনের এমপি নির্বাচিত হন তিনি। পিতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের মতই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ ও লালন করে চলা, ভাগ্নে আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে রয়েছে, অসামান্য অবদান।
যার কারণে এখনো মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। যে কারনে পিতার মত করেই, আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহও পেয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক উপাধি।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপি ১৯৯৬ এর ক্ষমতা আমলে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি। বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ছাড়াও পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন পরিবিক্ষণ কমিটির মন্ত্রী পদমর্যাদার আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে বরিশাল পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এছাড়া ১৯৭৪ সালে যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হলে বরিশাল জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালণ করেন তিনি। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
দলীয় সূত্র এবং বরিশালের প্রবীন নাগরিকরা জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলে বর্তমানে যেসব উন্নয়ন দৃশ্যমান তার সিংহভাগ এসেছে আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপি’র হাত ধরেই। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দীর্ঘ প্রতিক্ষিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়াম, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল আধুনিক নদী বন্দরসহ অসংখ্য সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। যা সবই এসেছে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ’র হাত ধরেই।তাছাড়া রাজনৈতিক শেষ জীবনে গৌরনদীকে জেলায় রূপান্তরের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
এদিকে শুধু উন্নয়নেই নয়, দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কিং মেকার হিসেবে আখ্যা পেয়েছেন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলে মুজিব বাহিনীর প্রধান আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপি। ১৯৭১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম এবং ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন তিনি।তবে মামলার ঝামেলার কারনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি তিনি। এর পরে ২০১৩ এবং ২০১৮ সালে পর পর দু’বার এমপি নির্বাচিত হন আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।বিগত দশবছরে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় ব্যাপক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকায় পাল্টে গেছে উপজেলাসহ গ্রামের বিভিন্ন অবকাঠাম,ছোট বড় রাস্তাঘাট পাকা করন,ব্রীজ কালভার্ট, চিকিৎসা ও স্কুল কলেজ নতুন ভবন,ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ,হাটবাজারের পাকা টল ঘর নির্মাণ,মডেল মসজিদ মাদ্রাসা,সড়কের পাশে আলোকসজ্জাসহ আত্মসামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ ইত্যাদি ইত্যাদিতে গ্রাম হয়ে উঠেছে শহরের আদলে।
অপরদিকে সেরনিয়াবাত পরিবারের তৃতীয় বংশধর ও আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সন্তানদের তিন ভাইয়ের মধ্যে জ্যেষ্ঠ সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
যিনি বর্তমানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের।বিগত পাঁচ বছর প্রতিনিধিত্ব করছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে থেকে। দাদা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এবং পিতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর মত করেই জনগণ ও নগর উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন দিন-রাত। বরিশাল সিটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। অর্জন করেছেন শ্রেষ্ঠত্ব। বিশেষ করে ৫ বছর মেয়াদী রাস্তা ও রাতের বেলা ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করে রাতারাতিই নগরবাসীর মন জয় করেছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। দক্ষ নেতৃত্বের কারনে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান সাদিক।
শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও নৌকার টিকেট নিয়ে তৃনমুল ও নগরবাসির ভালোবাসায় বিপুল ভোটে বরিশাল সিটি মেয়র নির্বাচিত সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
মেয়র হিসেবে চমক প্রদক অনেক কাজই করেছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। যার মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় ছিলো নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করতে নগর ভবনকে দুর্নীতি মুক্ত করা। তার দক্ষ নেতৃত্ব এবং পরিচালনার কারনে ঘুরে দাড়িয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির সাথে বেড়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের ভেতন-ভাতা। দেশের ইতিহাসে প্রথম পাঁচ বছরের গ্যারান্টিতে আধুনিক মেশিনে সড়ক উন্নয়ন এবং প্রথমবারের মত থ্রিডি জেব্রা ক্রসিং স্থাপন করে পত্রিকার শিরোনামও হয়েছেন একাধিকবার।
তাছাড়া সেরনিয়াবাত পরিবারের উত্তরাধীকার আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র মেঝ ছেলে মঈন আবদুল্লাহ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ছোট ছেলে সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ।
এ দিকে ইতিমধ্যেই বরিশাল-১ আসনের (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কান্ডারী যুব সমাজের আইকন সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ সকলের মন জয় করে নিয়েছেন।তিনিও দাদা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এবং পিতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর আর্দশকে বুকে ধারন করে আগামীতে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করছেন।