নিজেস্ব প্রতিনিধি,খুলনাঃ- বাংলাদেশ পুলিশে সদ্য যোগদানকৃত বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলদের (টিআরসি ) পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা গত ৯ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় বয়রাস্থ পুলিশ লাইন্স্ ডাইনিং লাউন্সে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়ের সাথে অনুষ্ঠিত হয়।
কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল ( টিআরসি )’দের মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে যোগদান করায় শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
তিনি বক্তব্যের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি ইতিহাসের মহানয়ক ও স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান স্থপতি বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার শত্রু কতিপয় ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে জাতির জনক শহীদ বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
একই সাথে ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে শহীদ সকল পুলিশ সদস্যসহ ৩০ লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা-বোনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলদের ( টিআরসি ) উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যে বাহিনীতে আপনারা যোগদান করেছেন সেই বাহিনীর রয়েছে এক গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস।
অসংখ্য পুলিশ সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ মাতৃকার তরে জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ থেকে আপনারাও এই গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাসের অংশীদার হলেন।
স্বাধীনতাত্তোর কালে ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বঙ্গবন্ধু যে অমিয় বাণী শুনিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার মহোদয় তা দৃপ্তকন্ঠে উচ্চারণ করেন, “একটা কথা ভুললে চলবে না তোমাদের, তোমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ, তোমরা ইংরেজের পুলিশ নও, তোমরা পাকিস্তানি শোষকদের পুলিশ নও, তোমরা জনগণের পুলিশ।
তোমাদের কর্তব্য জনগণকে সেবা করা, জনগণকে ভালোবাসা, দুর্দিনে জনগণকে সাহায্য করা।
আপনাদেরকে মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সকল লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে দেশপ্রেমের মহান ব্রত নিয়ে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
আপনাদেরকেই হতে হবে স্মার্ট বাংলাদেশের ‘স্মার্ট পুলিশ’। আপনাদের নিরাপরাধ, বিপন্ন ও বিপদগ্রস্থ মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। পুলিশের কাছে আগত সেবা প্রত্যাশী নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সাথে মানবিক আচরণ করতে হবে।
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের সেবার মান দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তজার্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সংবিধান ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আপনাদের হাত ধরে পুলিশ বাহিনী আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
সবশেষে পুলিশ কমিশনার মহোদয় নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব ন্যায়নীতি, সততা, স্বচ্ছতার সাথে পালন করার আহবান জানিয়ে সবার সু-স্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করে বক্তব্য সমাপ্ত করেন।’
কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( এএন্ডও ) বলেন যে-‘আধুনিকায়নের সাথে সাথে আপনাদেরকেই স্মার্ট বাংলাদেশের ‘স্মার্ট পুলিশ’ হতে হবে।
১৯৭২ সালের ১৫ই জানুয়ারি রাজারবাগে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের প্রত্যাশা অনুসারে দেশ প্রেম নিয়ে সেবা দিতে হবে।’ এছাড়াও তিনি ফোর্সের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, প্রস্পেক্ট এবং দেশপ্রেমের মাধ্যমে নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।
কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল ) বলেন-‘সরকারী চাকরির বিধিমালা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে ন্যায় নিষ্ঠভাবে কর্তব্য পালন করতে হবে।
এছাড়াও তিনি ফোর্সের ছুটি, অবসর ও পেনশনসহ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন।
এ সময় কেএমপি’র আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( এএন্ডও ) সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( ক্রাইম ) মোঃ সাজিদ হোসেন; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল ) মোছাঃ তাসলিমা খাতুন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) অতিঃ ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (আরসিডি) শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী এবং অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান, পিপিএম-সেবা-সহ পুলিশ অফিসারবৃন্দ ও নবীন পুলিশ সদস্যবৃন্দ।