আতাউর রহমান চঞ্চল,বিয়ের অনুষ্ঠানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কনের চাচা সেলিম সরদার কে মাথায় আঘাত করে গুরুতরভাবে আহত করা অভিযোগ পাওয়া যায়, আহত অবস্থায় সেলিমকে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে,কর্মরত চিকিৎসক বরিশাল সেবাচিম হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন, সেবাচিমে ভর্তি অবস্থায় আহত সেলিমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসা জন্য ঢাকায় রেফার করে দেন,পরে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা যাওয়ার পথিমধ্যে সেলিম সরদার (৩৬) মৃত্যুবরণ করেন।
গত শুক্রবার (২৭-অক্টোবর)বিকালে চারটার সময় এই সংঘর্ষের ঘটনায় সেলিমসহ উভয় পক্ষের চার থেকে পাঁচ জন আহত হয়।
বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেংঙ্গুটিয়া গ্রামের,কান্দিরপাড় এলাকায় ইকবাল সরদার (ফেলাই) এর কন্যা রিয়া আক্তার এর সাথে আগৈলঝাড়া উপজেলা বাকাল ইউনিয়নের, বাকাল গ্রামের শাহ আলম ফকিরের পুত্র মো.রিয়াদ ফকিরের শুভ বিবাহের অনুষ্ঠানে বরের আসন মঞ্চের সাজানো বেলুন ফোটানোকে নিয়ে সংঘর্ষ বাধে উভয় পক্ষের লোকজনের মাঝে।
এ সময় নিমন্ত্রিত কনের আত্মীয় সম্পর্কে (মামা) গৌরনদী উপজেলা শরিকল ইউনিয়নের- বাসিন্দা বর্তমানে স্বপরিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসবাস করছেন-পিতা- ইয়াসিন সরদারের পুত্র হৃদয় সরদার (২২)/ গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম ডুমুরিয়া গ্রামের পিতা পান্নু সরদারের পুত্র মুন্না সরদার (১৯)/ ও একই গ্রামের পিতা মন্নান সরদারের পুত্র আমির সরদার (২০) /গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের পিতা – শহীদ হাওলাদার এর পুত্র জসিম মোল্লা (২৫)/ এরা উত্তেজিত অবস্থায় বর পক্ষের উপর হামলা চালায় এসময় কনের চাচা (সেলিম) উভয় পক্ষের সংঘর্ষে জড়িয়ে পরা লোকজনকে সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার অনুরোধে এগিয়ে আসলে হামলাকারী হৃদয়, মুন্না ও জসিম এবং আমির এর হামলার শিকার হয়ে মাথায় গুরুতরভাবে আঘাত পেয়ে নিহত হয় সেলিম সরদার।নিহত সেলিম চেংঙ্গটিয়া গ্রামের আলেম সরদারের পুত্র।সেলিম বর্তমানে গৌরনদী উপজেলা খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বয়সা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে ও নিহত সেলিম সরদারের ছোট ভাই আনিস সরদার অভিযোগ করে বলেন, আমার বড় ভাই ইকবাল সরদারের কন্যা রিয়া আক্তারের বিয়ের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করে আমার মেঝ-ভাই সেলিম সরদার, তাতে আপত্তি পোষণ করে আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রীর আত্মীয় মামাতো ও ফুফাতো ভাই নিমন্তিত স্বজনদের, বিয়ের দিন সকালে পারিবারিক ভাবে আমাদের নিমন্ত্রিত আত্মীয়দের সাথে আমাদের কথা কাটাকাটি ও মন কষাকষি হয়, হৃদয় সরদার, মুন্না সরদার, আমির সরদার ও জসিম মোল্লার সাথে, তখনই তারা তর্ক বিতর্কের মধ্যে হৃদয় সরদার আমার ভাই সেলিমকে হত্যার ও মুন্না মোল্লা সবাইকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে থাকে। পরে দুপুরে বরযাত্রী আমাদের বাড়ি আসলে একটি বেলুন ফুটিয়ে ফেলে বরযাত্রীর লোকজন,এটাকে কেন্দ্র করেই বরযাত্রীর প্যান্ডেলে মধ্যে গন্ডগোল পাকিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি একপর্যায়ে সংঘর্ষের বাধে পুরো প্যান্ডেল জুড়ে সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে নিমন্ত্রিত আত্মীয় এই চারজন, চারপাশের লোকজন ছুটে এসে সংঘর্ষ থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে,সেই সাথে আমার ভাই সেলিম আমাদের নিমন্ত্রিত আত্মীয়দের সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করলে, হৃদয় সরদার, মুন্না সরদার, আমির সরদার ও জসিম মোল্লা, ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালায়,হামলার এক পর্যায়ে হৃদয় সরদার, শক্ত কাঠের লাঠি দিয়ে সেলিম এর মাথায় আঘাত করলে, ঘটনাস্থলেই সেলিম অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটে পরে যায়। আমরা সব কিছুই কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছি, পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত সেলিমের দুজন পুত্র সন্তান ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে,কিভাবে জীবন যাপন করবে এই অসহায় পরিবারটি। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এই খুনিদের আইনগতভাবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি কর্তৃপক্ষের কাছে। তিনি আরো বলেন আমির সরদার বর্তমানে একটি ধর্ষণ মামলার আসামি মামলা চলমান বর্তমানে জামিনে থাকা অবস্থায় এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িয়েছে, আর মুন্না সরদার ঢাকায় একটি মার্ডার মামলার পলাতক আসামী গ্রামে এসে গাঁডাকা দিয়ে হত্যাকান্ডে লিপ্ত হয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার তদন্ত অফিসার মাজারুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে লাশ আইনি প্রসেসিং এর মাধ্যমে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়ে এবং ময়নাতদন্ত শেষে লাশের দাফন কাফনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযোগ ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।