মোঃ হেমায়েত হোসেন খান নিজস্ব প্রতিবেদক মাদারীপুর- মাদারীপুরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় স্বামী সুমন শিকদারকে তালাক দিলেন তার স্ত্রী সাদিয়া আক্তার। তালাক দেওয়ার কিছুদিন পর অন্যত্র বিয়েও ঠিক হয়ে যায় সাদিয়া আক্তার।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাবেক স্বামী সুমন শিকদার। প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে এসিড নিক্ষেপ করে ঝলসে দিলেন সাবেক স্ত্রী সাদিয়া আক্তার এর মুখ।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে শরীয়তপুর থানার জাজিরা উপজেলার মাঝিরচর এলাকা থেকে সুমন শিকদারকে গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
এতে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাসুদ আলম (২৫ আগস্ট) শুক্রবার দুপুরে উক্ত বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, প্রেমের সম্পর্কে চার বছর আগে শিবচর উপজেলার মাদবরের চর এলাকার সিরাজ শিকদারের ছেলে সুমন শিকদারের সাথে পার্শ্ববর্তী এলাকার লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের বিয়ে হয় এবং তাদের বিয়ের পরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
সংসার জীবনের শুরু থেকেই সুমনের কাজে অনীহা ও মাদকসেবী হওয়ার কারণে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। একপর্যায়ে সাদিয়া তাকে তালাক দিয়ে দেওয়ার পরে তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়।
একথা সুমনের কানে পৌঁছানোর সাথে সাথে সাবেক স্বামী সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ঘটনার দিন বুধবার (১৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে সুমন সাদিয়ার ওপর এসিড নিক্ষেপ করেন।
এসিডে সাদিয়ার মাথা, মুখমণ্ডল সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মক ভাবে ঝলসে যায়। সাদিয়ার আত্ন চিৎকার শুনে স্থানীয়রা সাদিয়াকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গুরুতর অবস্থা দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করেন। বর্তমানে সাদিয়া সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ সুপার মাসুদ আলম আরো বলেন, এ ঘটনায় পরদিন সকালে ভুক্তভোগী সাদিয়া আক্তারের বোন তাছলিমা আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় একটি এসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। ঘটনার পর পর গা ঢাকা দিয়ে আত্ন গোপনে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত সাবেক স্বামী সুমন শিকদার।
ঘটনার পরে তদন্ত শুরু করেন মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়,অভিযুক্ত আসামি সুমন সিকদার শরীয়তপুর জেলার জাজিরা মাঝিরচর এলাকায় আত্ন গোপনে রয়েছে,সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুমন সিকদারকে।
প্রাথমিকভাবে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন বলে জানা রায়।
এছাড়াও তার সাথে আরো কয়েকজন সহযোগী ছিলেন বলে নিশ্চিত করা হয় এবং তাদের ধরতে পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে।
এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এ এম ফরহাদ রাহী মীর বলেন, মামলা গ্রহণের পর আমরা অভিযান পরিচালনা করে শিবচর ও জাজিরা পুলিশের সহায়তায় অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।
তবে তিনি তার ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ রেখে সুকৌশলে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেন। ফলে তাকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।