1. admin@protidinercrime.com : admin :
  2. protidinercrime@gmail.com : প্রতিদিনের ক্রাইম ডেস্ক : প্রতিদিনের ক্রাইম ডেস্ক
খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছীরা - Protidiner Crime - প্রতিদিনের ক্রাইম
১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| বসন্তকাল| মঙ্গলবার| রাত ১২:০৬|
সংবাদ শিরোনামঃ
মাদারীপুরে ড্রেজার ব্যবসা ও আধিপত্য নিয়ে তিনজন নিহত”আহত-২ বরিশাল নগর বিএনপি / জিয়ার রক্তে রঞ্জিত রাজপথ জিয়াতেই নিরাপদ! রামপালে ওয়ার্ল্ড ভিশনের নগদ আর্থিক সহায়তা পেলে ৩৮০ হতদরিদ্র পরিবার রামপাল সরকারি কলেজের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন রামপালে সুন্দরবন মহিলা কলেজের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন সড়ক দুর্ঘটনায় মেরুদন্ড ভেঙে গেছে, তবুও জীবন যুদ্ধে জয়ী হাসান সরদার খুলনার তেরখাদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ শহীদুল ইসলাম আটক ডাসারে গ্রাম আদালত বিষয়ক “কমিউনিটি মত বিনিময় ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত রানীশংকৈল উপজেলায় কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার, গ্রেফতার -১  গৌরনদীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছীরা

প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

সোহেল রানা রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো প্রধানঃ- ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন বার্তা। আবহমান গ্রাম-বাংলায় খেজুর রস ছাড়া যেন শীতের আমেজ পাওয়া যায় না। শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে বসে সুস্বাদু খেজুর গাছের রস খাওয়ার মজাই আলাদা। তাই শীতের শুরু থেকেই গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহের জন্য নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে এখন গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কে কত আগে খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারে সেই প্রতিযোগিতায় চলছে আত্রাইয়ের গাছিদের মাঝে।

বৈচিত্রপূর্ণ ছয়টি ঋতুর দেশ আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। এ দেশের এক একটি ঋতুর রয়েছে এক একটি বৈশিষ্ট্য। ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন বার্তা।

আবহাওয়া ও পরিবেশ প্রকৃৃতি এখন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না। আর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই গাছ থেকে রস সংগ্রহের পর্ব শুরু হবে। এবার কিছুটা আগেই নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সাথে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত।

আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে মাঘ মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি উপজেলার প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য আত্রাই উপজেলা এক সময় খ্যাতি ছিল। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীণতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, খেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।

কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরন করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। গ্রামীন জনপদে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুরের পাড়ে রাস্তার ধারে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুর গাছ কমছেই।

এখনও শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসে গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে। এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরি করতেন।

যার সাধ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন অবশ্যই সে কথা নতুন প্রজন্মের কাছে রূপকথা মনে হলেও বাস্তব। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ। এ গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। এটাই তার বৈশিষ্ট্য। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা। এ ছাড়া খেজুরর পাতা দিয়ে আর্কষনীয় ও মজবুত পাটি তৈরী হয়। এমনকি জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার। কিন্তু জয়বায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনসহ বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন উপজেলা জুড়ে বিলুপ্তির পথে।

নাটোরের লালপুর উপজেলা থেকে আসা গাছি কালাম মিঞা ও তার সহকর্মীরা জানান, আমরা পেশাগত কারণে প্রায় প্রতি বছরেই আত্রাই উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস এর জমিতে তাবু গেড়ে ওই এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে ৪ মাসের জন্য গাছ ভেদে ৫থেকে ৭কেজি করে খেজুরের গুড় দিয়ে গাছ গুলো আমরা নেই।

চাহিদা মত খেজুর গাছ না পাওয়ার কারণে রস কম হওয়ায় আশানুরুপ গুড় তৈরি করতে পাড়ি না। তারপরও এবছর প্রায় ২ শ’টির বেশি খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করেছি। বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে না দিয়ে জীবন-জীবিকার জন্য এই পেশা ধরে রেখেছি।

তবে যে ভাবে খেজুর গাছ কাটা হচ্ছে অল্প দিনের মধ্যেই এই এলাকায় আর আমাদের ব্যবসা হবে না। বর্তমান বাজারে আখের গুড় চিনি যে মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে তার চেয়ে মানসম্পন্ন খেজুরের গুড়ের দাম এবছর কিছুটা বেশি হবে এমনটাই আসা করছেন গাছিরা। শীত একটু বেশি পড়তে শুরু করলে আত্মীয়-স্বজন আনা নেয়া ও পিঠা-পুলির উৎসবে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয় সে পরিমাণে আমরা লাভ করতে পারি না। তবুও পেশাগত কারণে চালিয়ে যাচ্ছি এই ব্যবসা।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাপশ কুমার জানান, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে।

এদিকে উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ
© All rights reserved ©2024 protidinercrime.com