
মোঃ হেমায়েত হোসেন খান,নিউজ ডেস্ক মাদারীপুরঃ-
মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের দীয়াপাড়া এলাকাবাসীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ভেলাবাইচ প্রতিযোগিতা
ঐতিহ্যবাহী ভেলাবাইচ প্রতিযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এলাকার হাজার হাজার মানুষের উচ্ছ্বাস ও ঢাকের তালে তালে মুখরিত হয় পুরো এলাকা। এমন প্রাণবন্ত মুহূর্তগুলো সত্যিই গ্রামীণ ঐতিহ্যের এক অনন্য উদাহরণ।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৩ ঘটিকার সময় থেকেই আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সবাই দলে দলে ভেলা বাইচ দেখতে ভীড় জমানো শুরু করে খালের পাড়ে। দর্শনার্থীদের আনন্দে করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকার খালের দুই পারের দর্শনার্থীরা।
ভেলাবাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ কারীরা কলা গাছের ভেলা তৈরি করে বাইচে অংশ গ্রহন করেন। রোমাঞ্চকর এই ভেলাবাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি ঘোড়া, দ্বিতীয় পুরস্কার একটি ২১” টেলিভিশন, তৃতীয় পুরস্কার রাইস কুকার সহ সকল পরাজিতদের সান্তনা পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতালি প্রবাসী মোঃ ইকবাল বেপারী, সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ হুমায়ুন কাজী,বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এ্যাড আজিজুল হক মুকুল,সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন, গিয়াসউদ্দিন কবিরাজ, সহযোগিতায় ছিলেন, শহীদুল আলমসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মাদারীপুর সদর থানার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকবৃন্দ।
এসময় ঐতিহ্যবাহী ভেলাবাইচ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হিসাবে প্রথম পুরস্কার অর্জন ঘোড়া বিজয়ী হলেন, দিয়াপাড়া এলাকার ফরহাদ বেপারী, দ্বিতীয় পুরস্কার ২১”ইঞ্চি টেলিভিশন বিজয়ী হলেন গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার রবিউল ইসলাম, তৃতীয় পুরস্কার রাইস কুকার বিজয়ী হলেন,মোঃ আকরাম বেপারী সহ পরাজিতদের মাঝেও সান্তনা পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এসময় এ্যাডভোকেট আজিজুল হক বলেন, আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য আজও মানুষের মাঝে ধরে রাখতে এলাকাবাসী অক্লান্ত পরিশ্রম করে ঐতিহ্যবাহী ভেলাবাইচ কে জীবন্ত রেখেছে। আধুনিকতার এই যুগেও গ্রামবাংলার সংস্কৃতি ও ক্রীড়া-সংস্কার ধরে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। এ ধরনের আয়োজন শুধু বিনোদন নয়, এটি আমাদের শেকড়ের সঙ্গে সংযোগের প্রতীক। আমি চাই, প্রতি বছর নিয়মিতভাবে এমন প্রতিযোগিতা হোক— যাতে নতুন প্রজন্ম গ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে জানতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই তরুণ সমাজ খেলাধুলা ও সংস্কৃতিতে সম্পৃক্ত থাকুক। ভেলা বাইচের মতো উদ্যোগে স্থানীয় অর্থনীতি, বন্ধুত্ব ও সামাজিক সম্প্রীতি গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই এমন একটি প্রাণবন্ত আয়োজন করার জন্য।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর বর্ষা শেষে এলাকায় নৌকা বাইচের আয়োজন হলেও এবার প্রথমবারের মতো ভেলা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যতিক্রমী এই আয়োজন এখন কুনিয়া ইউনিয়নের দিয়াপাড়া এলাকার আশপাশের এলাকাবাসীর এক আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছে।