
মোঃ হেমায়েত হোসেন খান,মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ-
নড়াইলে্ জেলার এক লিবিয়া প্রবাসীর কষ্টার্জিত প্রায় ৩ কোটি টাকার সহায় সম্পদ বাড়ি গাড়ি ও স্বর্ণালংকার প্রতারণা করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার হাড়িডাঙ্গা গ্রামের নাসির লস্করের ছেলে রানা লস্করের সাথে মাদারীপুর সদর উপজেলার পৌর শহরের পাকদী এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের আতাউল সিপাহির মেয়ে নাজনীন আক্তার স্নিগ্ধার সঙ্গে-২০২৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরে লিবিয়া প্রবাসী রানা লস্করের। স্ত্রীকে লিবিয়ায় নিয়ে যায়।
স্ত্রীর প্রতি অঘাত বিশ্বাস ও গভীর ভালবাসায় বিয়ে উপলক্ষে স্ত্রীকে দিয়েছে দুইটি প্রাইভেট কার এবং ঢাকার মিরপুর ১৪ নাম্বার ইব্রাহিমপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ রোড এলাকাতে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে স্ত্রী নাজনীন আক্তার স্নিগ্ধার নামে দলিল করে দিয়েছে সাত তালা ভবনের দুইটি বাড়ির দুইটি ফ্লাট।
এদিকে স্বামী রানা লস্কর নগদ টাকার প্রয়োজন হলে ঢাকার একটি ফ্লাট বাড়ি বিক্রির কথা বলে। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে তার স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি সৃষ্টি হয়। এক পযার্য়ে বাড়ি বিক্রি নিয়ে স্ত্রী বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। পরে তাকে স্বামী বলতে অস্বীকার জানান এই প্রতারক স্ত্রী।
বিয়ের পরে স্বামী রানাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিজের নামে সব কিছু রেজিস্ট্রি দলিল করে নিয়ে এবং গত (১২ অক্টোবর ) স্বামীকে একতরফা ডিভোর্স পেপার পাঠান। এরপরে প্রবাসীর পরিবারের বাবা, মাকে ঢাকার ফ্লাট বাড়ি থেকে বের করে দেন প্রতারক স্ত্রী। প্রবাসীর কয়েক বছরের অর্জিত সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ায় কান্নায় বিভোর হয়ে পরেন স্বামী রানা লস্কর।
এদিকে স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, স্নিগ্ধা ও তার ভাই সোহাগ সিপাহী শুধু রানার সাথেই প্রতারণা করে নাই, তারা আমাদের সাথেও প্রতারণা করেছে। রানার নাম ভাঙ্গিয়ে ইতালিতে পাঠিয়ে দিবে বলে হাতিয়ে নিয়েছে এই অঞ্চলের কোটি কোটি টাকা। কিন্তু বিদেশ নেওয়ার বিষয় কিছুই জানতেন না তার প্রবাসী স্বামী রানা লস্কর।
একই এলাকার রুমা,সিরাজ, পাবেল,আবুল হোসেন বলেন, আমাদের মাদারীপুরের মেয়ে স্নিগ্ধা ভিন্ন জেলার একটা ছেলেকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে তার সাথে প্রতারণা করে। তার কাছ থেকে তিন কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছে। এমন কি আমাদের সাথেও প্রতারণা করেছে বিদেশ নেওয়ার কথা বলে এই স্নিগ্ধা হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।
রুমা আক্তার নামের এক নারী বলেন, এক সময়ে স্নিগ্ধার পরিবার ঠিকমতো ভাত খেতে পারত না। তখন আমার সাথে রানার সাথে পরিচয় ছিল। রানা বিয়ে করার কথা বললে আমি স্নিগ্ধাকে দেখাই। তারপরে স্নিগ্ধাকে বিয়ে করতে রাজি হয় রানা। পরে ২০২৩ সালের শেষের দিকে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু স্নিগ্ধা ও তার পরিবার যে এধরনের এতবড় প্রতারক এটা আমার জানা ছিল না।
তিনি আরো বলেন, একজন অন্য জেলার প্রবাসী ছেলের সাথে প্রতারণা করে তাদের সহায়-সম্পত্তি বাড়ি গাড়ি সবগুলো দলিল করে নিয়েছে। এই স্নিগ্ধাদের মূল ব্যবসায়ী হলো প্রতারণা করে মানুষের সহায় সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। আমি সরকার ও প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী প্রবাসী রানা লস্কর বলেন, “আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবেসে সংসার করছিলাম, কিন্তু সে আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার কষ্টার্জিত বাড়ি গাড়ি সহায় সম্পদ স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়েছে। সে আমার সাথে এমন প্রলোভন দেখিয়েছে। তখন আমি তাকে বিশ্বাস করে বাড়ি গাড়ি স্বর্ণালংকার সহ তিন কোটি টাকার সম্পদ তার নামে দলিল করে দিয়েছি। কিন্তু সে আমার সাথে প্রতারনা করে আমার বাবা মাকে ফ্লাট থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন সে আমার সঙ্গে সংসার করতে অস্বীকার করছে। এবং আমার সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছে”আমি প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং ন্যায় বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত নাজনীন আক্তার স্নিগ্ধার মুঠো ফোনে একাধিক বার ফোন করেও তার কোন সারা পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আদিল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।