আতাউর রহমান চঞ্চলঃ- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন ও পরীবিক্ষন কমিটির আহবায়ক ও মন্ত্রী পদমর্যাদায় আলহাজ্ব আবুল হাসানাাত আব্দুল্লাহ এমপি বলেন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে।যতোদিন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবে ততদিন এদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হবে না।
সার্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে সোমবার (১৬ অক্টোবর) বেলা এগারোটার সময় বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ হলরুমে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও থানা পুলিশের সাথে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ আরও বলেছেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজার পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই পূজাকে সামনে রেখে একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করবে। এজন্য আমাদের সজাগ দৃষ্টি রেখে আইন শৃংখলা সমুন্নত রেখে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নির্বিঘ্নে পূজার্চনা সম্পন্ন করার পাশাপাশি সরকারের অসাম্প্রদায়িক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শৃংখলা কমিটি গঠণ করে সর্বত্র মনিটরিং করা হবে।
তিনি বলেন, পূজার সময় মন্ডপগুলো লোড শেডিং মুক্ত রাখা, পুজার আগে ৩দিন, পুজার ৫দিন ও পূজার পরে ৩ দিনসহ মোট ১১দিন মন্ডপগুলোতে আনসার সদস্যরা দ্বায়িত্ব পালন করবে। মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও নিজস্ব জেনারেটর সরবরাহ করে মন্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৮৭০জন আনসার সদস্যর পাশাপাশি পুলিশের ১৫টি মোটরসাইকেল টিম, ৪টি ভ্রাম্যমান টিমসহ ৪টি তল্লাশী চেক পোস্ট বসাবে পুলিশ। এছাড়াও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে সাদা পোশাকে পুলিশ দ্বায়িত্ব পালন করার কথা জানানো হয়।
পূজায় ৮৩ মেট্টিক টন সরকারী চাল বরাদ্দের সাথে মন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে অনুদান প্রদানেরও ঘোষণা দেন তিনি।
“ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” আবহমান কাল থেকে এই চেতনার অ-সাম্প্রদায়িক উর্বর ভূমি বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পুজা উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রস্তুতি মুলক সভায় প্রধান অতিথিব বক্তব্যে মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি মুলক সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈ, গৌরনদী পৌর মেয়র হারিছুর রহমান হারিছ, আগৈলঝাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো.লিটন, উপজেলা ভাই চেয়ারম্যান মো.রফিকুল ইসলাম তালুকদার,আগৈলঝাড়া পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস, রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার, বাগধা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি, গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল হোসেন টিটু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো.কামরুজ্জামান সেরনিয়াবাত (আজাদ) সাধারণ সম্পাদক মো.শহীদ তালুকদার,সিনিয়র সহ-সভাপতি মো.আব্দুল্লাহ লিটন।রাজিহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ সিকদার ও থানা নবাগত অফিসার ইন চার্জ মো. আলম চাঁদ।
সভায় মন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. খায়রুল বশার,উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন, ভাইস চেয়ারম্যানগন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকগন উপস্থিত ছিলেন।প্রস্তুতি সভায় জানানো হয়-১৬৬টি মন্ডপে পুজার আয়োজনের মধ্য দিয়ে অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বেশী পুজা অনুষ্ঠিত হবে আগৈলঝাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে। পুজায় সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে ৮৩ মেট্টিক টন জিআর চাল বরাদ্দ হিসেবে প্রতি মন্ডপে ৫শ কেজি করে চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।
এর সাথে মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র নিজস্ব তহবিল থেকে মঙ্গলবার বিকেলে প্রতি মন্ডপে অনুদান প্রদান করা হবে।
থানা অফিসার ইন চার্জ মো. আলম চাঁদ জানান, এ বছর ১৫৮টি স্থায়ী মন্ডপের মধ্য সাধারণ পুজা মন্ডপের সংখ্যা ৫২টি, ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপের সংখ্যা ৫৪টি এবং অধিক ঝুঁকিপূণ মন্ডপের সংখ্যা ৩৫টি নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৫৮টি পুজা মন্ডপ ছাড়া বাকি ৮টি মন্ডপে আগামী চৈত্র মাসে বাসন্তি পুজা অনুষ্ঠিত হবে। ১৫৮টি পুজা মন্ডপে প্র্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন স্তরে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে ষষ্ঠী পুজা থেকে প্রতীমা বিসর্জন পযন্ত নিরাপত্তা গ্রহন করা হয়েছে। এ ছাড়াও মন্ডপগুলোতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সাথে প্রায় ৮শ ৭০জন প্রশিক্ষিত আসনার সদস্যদের মাধ্যমে মন্ডপ ও যাতায়াতের পথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
মন্ডপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে অপসংস্কৃতি ও অশ্লীলতা বন্ধের জন্য কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছে প্রশাসন ও উপজেলা পুজা উদ্যাপন কমিটির নেতৃবৃন্দরা।